আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঋষি সুনাক। দেশটিতে মাত্র সাত সপ্তাহের মধ্যে এ নিয়ে তিন জনকে এই দায়িত্বে দেখা গেল।
সাবেক এই ট্রেজারি চিফ ব্রিটেনের প্রথম অশ্বেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী ও পার্টি প্রধানের পদ থেকে বরিস জনসন বিদায় নিলে, সেপ্টেম্বরে, ক্ষমতার দৌঁড়ে লিজ ট্রাসের কাছে হেরে যান তিনি। এমপিদের ভোটে যদিও এগিয়ে ছিলেন ঋষি সুনাক; কিন্তু, পার্টির সদস্যদের ভোটে তিনি পরাজিত হন এবং তখন প্রধানমন্ত্রী হন লিজ ট্রাস।
কিন্তু, অর্থনৈতিক সংকটের জেরে এবং কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যকার অন্তর্দ্বন্দ্বে, মাত্র ৪৪ দিনের মাথায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান লিজ ট্রাস। এরপর, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ঋষি সুনাক।
দেশটির সর্বোচ্চ পদে আসীন হওয়ার আগে, অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ৪২ বছর বয়সী ঋষি সুনাক।
লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী ও পার্টি প্রধানের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অতি দ্রুত দেশে ফিরে আসেন। তিনি তখন ক্যারিবীয় অঞ্চলে ছুটি কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু, এরপর তিনি এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে নিজ থেকেই সরে দাঁড়ান। তিনি স্বীকার করেন যে, তিনি দলীয় সদস্যদেরকে একতাবদ্ধ করতে পারবেন না।
মিস্টার সুনাকের রানিং মেট ছিলেন যুক্তরাজ্যের লিডার অফ দ্য হাউজ অফ কমন্স পেনি মরডান্ট। কিন্তু, নির্বাচনের কয়েক মিনিট আগে পদপ্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন তিনি। ফলে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যান ঋষি সুনাক।
কিংস কলেজের একজন গবেষক অ্যালান ওয়েজার বলেন, ব্রিটিশ মার্কেট প্রতিষ্ঠা করাটাই হবে মিস্টার সুনাকের প্রথম কাজ।
প্রথম হিসেবে ইতোমধ্যে বেশ কিছু রেকর্ড করেছেন ঋষি সুনাক। ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রথম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তিনি। এই পদে একমাত্র তিনিই প্রথম হিন্দু ধর্মাবলম্বী। আর, ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দাদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি ধনাঢ্য। তার মোট সম্পদের পরিমাণ দেড় বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের সমান। এছাড়া, দেশটির ২০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সী প্রধানমন্ত্রীও তিনি।
ঋষি সুনাকের জন্ম ১৯৮০ সালে ইংল্যান্ডের বন্দরনগরী সাদাম্পটনে। সাবেক এই অর্থমন্ত্রীর উত্তরাধিকার নিয়ে ভারতীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তবে, সাধারণ জনগণের মাঝে কেউ কেউ এই নতুন নেতৃত্ব নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্য থেকে কেউ কেউ বলেন, জাতি-বর্ণ বিচার না করে তারা ভাল নেতৃত্ব দেখতে চান। কেমিস্ট্রির লেকচারার পূনম কিখা বলেন, শেতাঙ্গ-অশেতাঙ্গ হওয়ার বিষয়টি কোনো পার্থক্য গড়ে দেয় না।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক ব্রিটিশ ফিউচার-এর ডাইরেক্টর সুন্দার কাটওয়ালা বলেন, ব্রিটিশ রাজনীতিতে এখন একটি ঐতিহাসিক অধ্যায় দেখা যাচ্ছে।
মিস্টার কাটওয়ালা আরও বলেন, মিস্টার সুনাক এই দায়িত্ব পাওয়ায় মানুষের চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসছে।
প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: