করোনাভাইরাসজনিত বিলম্বের পর আবার শুরু হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া

করোনাভাইরাসের কারণে নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া স্থগিত ছিল, অনেক আবেদন অমীমাংসিত ছিল, এতে আবেদনকারীদের মধ্যে বাড়ছিল উৎকণ্ঠা।

Indian nationals Yash-Sanjiv Rungta and his wife Aditi have had their citizenship application delayed by the pandemic.

Indian nationals Yash-Sanjiv Rungta and his wife Aditi have had their citizenship application delayed by the pandemic. Source: Supplied

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনশিপ পরীক্ষা এবং সাক্ষাৎকারের প্রক্রিয়াগুলো বছরের শুরু থেকে এতদিন স্থগিত ছিল, সেই প্রক্রিয়া আবার সারা দেশের রাজ্যগুলোর রাজধানী শহরগুলোতে শুরু হচ্ছে।  

ফেডারেল সরকার বলেছে ব্রিসবেন, সিডনি, এডিলেড এবং পার্থে এপয়েন্টমেন্ট নেয়া শুরু হয়েছে এবং এ মাসের শেষ দিকে ক্যানবেরা, হোবার্ট এবং ডারউইনে শুরু হবে।  

নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া স্থগিত হওয়াতে আবেদনকারীদের মধ্যে প্রচন্ড উদ্বেগ তৈরী হয়েছে, এতে অনেক আবেদন জমে গিয়ে দীর্ঘদিন পড়ে থাকার অবস্থা তৈরী হতে পারে বলে তাদের ধারণা, এখন এই প্রক্রিয়া আবার চালু হওয়াতে তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। 

ভারপ্রাপ্ত ইমিগ্র্যাশন মিনিস্টার এলান টাজ বলেন, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব লাভের প্রক্রিয়ায় সাক্ষাৎকার এবং নাগরিকত্বের পরীক্ষা দেয়া গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, এর মাধ্যমে কোন অভিবাসীর অস্ট্রেলিয়ার প্রতি আনুগত্যের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
Acting Immigration Minister Alan Tudge at a press conference at Parliament House in Canberra.
Acting Immigration Minister Alan Tudge at a press conference at Parliament House in Canberra. Source: AAP
করোনাভাইরাসের পরিস্থিতির মধ্যেও গত অর্থবছরে রেকর্ড সংখ্যক ২০৪,০০০ অভিবাসী অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব পেয়েছেন, একইসাথে সম্পন্ন হয়েছে ৭৩,০০০ অনলাইন সিটিজেনশিপ অনুষ্ঠান। 

সরকারি হিসেবে আরো প্রায় ১৫০,০০০ নাগরিকত্বের আবেদন প্রক্রিয়াধীন আছে, এদের মধ্যে সিটিজেনশিপ পরীক্ষার্থী এবং সাক্ষাৎকারের আবেদনও আছে।  

কুইন্সল্যান্ডের বাসিন্দা ইয়াশ-সঞ্জীব রুংতা বলেন, তিনি ও তার স্ত্রী গত বছরের ডিসেম্বরে নাগরিকত্বের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু আবেদন এখন কি অবস্থায় আছে সে বিষয়ে এখনো তারা কোন খবর জানেন না।  

ভারতীয় নাগরিক এই ব্যক্তি ছয় বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন, অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া এবং ক্রিকেট নিয়ে উৎসাহই তাকে এখানে আসতে প্রণোদনা জাগিয়েছিল।  

তিনি এসবিএস নিউজকে বলেন, "অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেনশিপ পাওয়া গর্ব ও সম্মানের বিষয়।" 

"আমরা এই দেশের নাগরিক হওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি, এতে হয়তো সময় লাগছে কিন্তু একদিনতো নাগরিক হবোই।" 

সরকার বলছে সিটিজেনশিপের এপয়েন্টমেন্ট দেয়া হবে স্টেট এবং টেরিটরিগুলোর স্বাস্থ্য বিধি মেনে, যাতে স্টাফ এবং আবেদনকারীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।  

এদিকে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম এফেয়ার্স -এর একজন মুখপাত্র বলেন, সার্ভিসেস অস্ট্রেলিয়া রিজিওনাল অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সিটিজেনশিপ টেস্ট পরিচালনা করছে।  

এদিকে মেলবোর্নের সিটিজেনশিপ টেস্ট এবং ইন্টারভিউ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, কারণ এই সিটিতে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি অনুকূল নয়।  

মেলবোর্নের বাসিন্দা আমূল জানি এমনই পরিস্থিতিতে আছেন, তার নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া আরো বিলম্বিত হবে বলে তিনি কিছুটা হতাশ।" 

তিনি এসবিএস নিউজকে বলেন, "এটা ধৈর্য্যের বিরাট পরীক্ষা এবং হতাশাব্যঞ্জক - এটা যত তাড়াতাড়ি হয় ততই ভালো।"  

মিঃ জানি তার স্ত্রীসহ ছয় বছর আগে ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন এবং তাদের সাত বছরের পুত্র আছে।  গত মার্চে তারা নাগরিকত্বের আবেদন করেছিলেন। 

করোনাভাইরাসের পরিস্থিতির উন্নতির সাথে সাথে নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রায় ১৬০০ ব্যক্তি একটি পিটিশন করেছিল। 

বর্তমানে ৩৫,০০০ ব্যক্তির সিটিজেনশিপের আবেদন অনুমোদন পেয়েছে, তারা এখন নাগরিকত্বের অনুষ্ঠানের জন্য অপেক্ষা করছে, গত এপ্রিলে এই সংখ্যাটি ছিল ৮৫,০০০।  

অস্ট্রেলিয়ায় প্রত্যেককে একে অপর থেকে ১.৫ মিটার দূরত্বে অবস্থান করতে হবে। আপনার রাজ্যের বিধিনিষেধগুলো দেখুন। আপনি যদি ঠাণ্ডা বা ফ্লুয়ের মত উপসর্গ অনুভব করেন তাহলে চিকিৎসককে ফোন দিন অথবা করোনা ভাইরাস হেলথ ইনফর্মেশন হট লাইন ১৮০০০২০০৮০ এই নাম্বারে ফোন দিন। এ সংক্রান্ত আরও খবর ও তথ্য আপনার ভাষায় জানতে ভিজিট করুনঃ

আরও পড়ুনঃ 

Share
Published 14 August 2020 12:09pm
By Tom Stayner.
Presented by Shahan Alam
Source: SBS

Share this with family and friends